Friday, May 27, 2022

Monday, May 23, 2022

কিভাবে ইলন মাস্ক ওয়েব সফটওয়্যার কোম্পানি Zip2 এর যাত্রা শুরু করলেন?


 1995 সালে, মাস্ক, তার ভাই কিম্বল এবং গ্রেগ কৌরি মাস্কের বাবার কাছ থেকে ধার করা তহবিল নিয়ে ওয়েব সফ্টওয়্যার কোম্পানি Zip2 প্রতিষ্ঠা করেন। তারা পালো আল্টোতে একটি ছোট ভাড়া অফিসে উদ্যোগটি রেখেছিল। কোম্পানিটি মানচিত্র, দিকনির্দেশনা এবং হলুদ পাতা সহ সংবাদপত্র প্রকাশনা শিল্পের জন্য একটি ইন্টারনেট শহর নির্দেশিকা তৈরি ও বাজারজাত করে। মাস্ক বলেছেন যে কোম্পানি সফল হওয়ার আগে, তিনি একটি অ্যাপার্টমেন্ট সামর্থ্য করতে পারেননি এবং পরিবর্তে একটি অফিস ভাড়া নেন এবং সোফায় শুতেন এবং ওয়াইএমসিএ-তে গোসল করতেন, এবং তার ভাইয়ের সাথে একটি কম্পিউটার শেয়ার করেন।


মাস্কের মতে, "ওয়েবসাইটটি দিনের বেলায় ছিল এবং আমি এটিকে রাতে কোডিং করছিলাম, সপ্তাহে সাত দিন, সব সময়।" ] এবং সিটিসার্চের সাথে একত্রীকরণের পরিকল্পনা পরিত্যাগ করার জন্য পরিচালনা পর্ষদকে রাজি করান। সিইও হওয়ার জন্য কস্তুরীর প্রচেষ্টা, এটির চেয়ারম্যান রিচ সোরকিনের অধীনে একটি পদ,বোর্ড দ্বারা ব্যর্থ হয়। কমপ্যাক 1999 সালের ফেব্রুয়ারিতে নগদ $307 মিলিয়নের বিনিময়ে Zip2 অর্জন করে, এবং মাস্ক তার 7-শতাংশ শেয়ারের জন্য $22 মিলিয়ন পেয়েছিলেন।


X.com এবং PayPal

মূল নিবন্ধ: X.com, PayPal, এবং PayPal মাফিয়া

1999 সালে, মাস্ক একটি অনলাইন আর্থিক প
রিষেবা এবং ই-মেইল পেমেন্ট কোম্পানি X.com সহ-প্রতিষ্ঠা করেন। স্টার্টআপটি ছিল প্রথম ফেডারেলভাবে বীমাকৃত অনলাইন ব্যাঙ্কগুলির মধ্যে একটি, এবং, অপারেশনের প্রাথমিক মাসগুলিতে, 200,000 জনেরও বেশি গ্রাহক এই পরিষেবাতে যোগদান করেছিলেন। কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা মাস্ককে অনভিজ্ঞ হিসেবে গণ্য করেছিল এবং বছরের শেষ নাগাদ তাকে Intuit CEO বিল হ্যারিসের সাথে প্রতিস্থাপন করেছিল। পরের বছর, প্রতিযোগিতা এড়াতে X.com অনলাইন ব্যাংক কনফিনিটির সাথে একীভূত হয়।[48][61][62] ম্যাক্স লেভচিন এবং পিটার থিয়েল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত,[63] কনফিনিটির নিজস্ব অর্থ-স্থানান্তর পরিষেবা পেপ্যাল ​​ছিল, যা X.com-এর পরিষেবার চেয়ে বেশি জনপ্রিয় ছিল।


একীভূত কোম্পানির মধ্যে, মাস্ক সিইও হিসাবে ফিরে আসেন। ইউনিক্সের তুলনায় মাইক্রোসফ্ট সফ্টওয়্যারের প্রতি মাস্কের অগ্রাধিকার কোম্পানিতে ফাটল সৃষ্টি করে এবং থিয়েলকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করে। ফলে প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং একটি সুসংহত ব্যবসায়িক মডেলের অভাবের কারণে, বোর্ড মাস্ককে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং সেপ্টেম্বর 2000 সালে তাকে থিয়েল দিয়ে প্রতিস্থাপন করে। 68][69] 2002 সালে পেপ্যাল ​​ইবে দ্বারা $1.5 বিলিয়ন স্টকের বিনিময়ে অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, যার মধ্যে মাস্ক - 11.72% শেয়ারের সাথে বৃহত্তম শেয়ারহোল্ডার - $175.8 মিলিয়ন পেয়েছেন।[70][71] 2017 সালে মাস্ক একটি অপ্রকাশিত পরিমাণে পেপ্যাল ​​থেকে X.com ডোমেনটি ক্রয় করেন, ব্যাখ্যা করে যে এটির অনুভূতিমূলক মূল্য রয়েছে।


For More - Click Here

ইলিশ গবেষণায় মাইলফলক


 ইলিশ, বাংলাদেশের পরিচয় বহনকারী একটি জাতীয় সম্পদ, যা তার বৈশিষ্ট্য ও স্বাদে বিশ্বে সমাদৃত। এই মাছ বাঙালি সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং পৃথিবীর বাংলাভাষী মানুষের মধ্যে সেতুবন্ধ রচনাকারী একটি উপাদান। জামদানি শাড়ির পর ভৌগোলিক পরিচয় বহনকারী পণ্য হিসেবে সম্প্রতি ইলিশও যুক্ত হয়েছে। ফলে এই মাছ আমাদের একান্তই নিজস্ব পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে আর কোনো বাধা নেই।


জীবের জীবনরহস্য কী?

আমরা জানি, প্রতিটি জীব এক বা একাধিক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোষের সমন্বয়ে গঠিত একটি বৃহৎ আকৃতির দেহ। এককোষী প্রাণী অ্যামিবা থেকে শুরু করে বহুকোষী প্রাণী মানুষ, সবারই কোষের বাহ্যিক গঠন দেখতে কিন্তু একই রকম। অ্যামিবার কোষে যেসব অঙ্গাণু থাকে, আমাদের শরীরের বিভিন্ন কোষেও একই ধরনের অঙ্গাণুর উপস্থিতি আমরা দেখতে পাই। তাই বলে অ্যামিবার কোষ আমাদের শরীরে প্রতিস্থাপন করলে সেটা কিন্তু আমাদের শরীরে কাজ করবে না। কোষের


এই স্বকীয়তা নির্ধারিত হয় কোষের মধ্যে অবস্থিত নিউক্লিয়াস নামের অঙ্গাণু দ্বারা। নিউক্লিয়াসই প্রতিটি কোষের গঠন ও কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। মোদ্দাকথা, নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকা ক্রোমোজোম বা ডিএনএই হচ্ছে সেই মাস্টার অণু, যার দ্বারা কোষের সব কাজ সম্পাদিত হয়। তাই ডিএনএকে বলা হয় জীবের বংশগতির ধারক ও বাহক। একটি কোষের ডিএনএ–ই নির্ধারণ করে কোন পরিবেশে, কোন অবস্থায় একটি কোষ তথা একটি জীব কী ধরনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। প্রতিকূল পরিবেশে কীভাবে নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে, সেই তথ্য কিন্তু লিপিবদ্ধ থাকে এই বৃহৎ অণুর মধ্যে। এ ছাড়া একই জীবের বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে এই অণুটিই সাধারণত প্রবাহিত হয় হয়, অন্য কিছু নয়। একটি জীবের ডিএনএকে বলা হয় তার জেনোম। ডিএনএ গঠিত হয় চারটি মাত্র নাইট্রোজেনাস বেসড ক্ষার দিয়ে। সংক্ষেপে এদের বলা হয় A, T , G ও C। সব জীবের ডিএনএতে এ চারটি বেসই একের পর এক দুই স্তরে সজ্জিত হয়ে পুরো ডিএনএ অণুটি তৈরি করে। তাই কোনো জীবের জিনোম সিকোয়েন্স জানা থাকলে তার জীবনপ্রকৃতির সব তথ্যই আবিষ্কার করা সম্ভব হয়। ডিএনএ সিকোয়েন্সিংয়ের উন্নত প্রযুক্তি আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে বর্তমানে স্বল্প সময়ের মধ্যে এখন অনেক জটিল জীবেরও জিনোম সিকোয়েন্স করা সম্ভব হচ্ছ


জিনোম সিকোয়েন্স কীভাবে করা হয়?

জিনোমের দৈর্ঘ্য একেক জীবের একেক রকম হয়। অতি ক্ষুদ্র ই. কোলাই ব্যাকটেরিয়ার জিনোমের আকৃতি ৪.৬ মিলিয়ন বেস পেয়ার, আর মানুষের জিনোমের আকৃতি হলো ৩.২ বিলিয়ন বেস পেয়ার এবং এটা সুতার মতো ২ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি আণুবীক্ষণিক বস্তু। ৩.২ বিলিয়ন বেস পেয়ার সুতার প্রতিটি বেসের সজ্জাকে পুনরুদ্ধার করা সহজ কাজ নয়। ডিএনএর সিকোয়েন্স বের করার জন্য বিজ্ঞানী ফ্রেডেরিক সেঙ্গার প্রথম একটি পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন ১৯৭৭ সালে। এর নাম স্যাঙ্গার সিকোয়েন্সিং পদ্ধতি এবং এই পদ্ধতির মাধ্যমেই ২০০৩ সালে মানুষের জিনোম সিকোয়েন্স আবিষ্কার হয়েছিল। সেটা যা শুরু হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এই পদ্ধতিটি নির্ভুল হলেও এতে প্রচুর সময় ও খরচ হয়। তাই বিজ্ঞানীরা পরে সিকোয়েন্সিংয়ের নতুন নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। এর একটি পদ্ধতিকে নেক্সট জেনারেশন সিকোয়েন্সিং বা এনজিএস প্রযুক্তি বলে। এই প্রযুক্তির অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম আছে। এক একটা প্ল্যাটফর্মের মূলনীতি একেক রকম। এ রকম কয়েকটি প্ল্যাটফর্ম হলো ইলুমিনা (Illumina), প্যাকবায়ো (PacBio), এবিআই সলিড (ABI Solid), আয়ন টরেন্ট (Ion Torrent) ইত্যাদি। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মেরই একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য হলো অতি অল্প সময়ে অল্প খরচে অনেক বড় ডিএনএকে সিকোয়েন্স করা সম্ভব। আমরা ইলিশ মাছের ক্ষেত্রে ইলুমিনা ও প্যাকবায়ো দুটি পদ্ধতিই ব্যবহার করেছিলাম, যাতে সিকোয়েন্স ডেটাটি নির্ভুলভাবে পাওয়া সম্ভব হয়। এনজিএস থেকে পাওয়া সিকোয়েন্স ডেটাকে পরে অ্যাসেম্বলি ও অ্যানোটেশন করার জন্য দক্ষ জৈবপ্রযুক্তিবিদ ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারের সাহায্য নেওয়া হয়, যেখানে এ থেকে প্রাপ্ত বিশাল ডেটাকে বিভিন্ন বায়োইনফরমেটিক টুলের সাহায্যে সম্পাদন করা হয় এবং অ্যানোটেশন কত সূক্ষ্মভাবে হয়েছে, তা কিছু মাপকাঠি দিয়ে পরিমাপ করা যায়। সব মাপকাঠি পরিমাপ করে আমরা দেখাতে সক্ষম হয়েছি যে ইলিশের পুরো জিনোম Sequence অনেকটা নির্ভুল ছিল।


ইলিশ ও ইলিশের জীবনচক্রের যত অজানা দিক

ইলিশ মাছের জীবনচক্র অন্য যেকোনো সামুদ্রিক অথবা মিঠাপানির মাছের মতো নয়। সামুদ্রিক অথবা মিঠাপানির মাছ হয় সমুদ্রে নয়তোবা নদীর মিঠাপানিতে তাদের জীবনচক্র সম্পন্ন করে। কিন্তু ইলিশ মাছ দুটো পরিবেশই ব্যবহার করে নিজের বংশ বৃদ্ধি করার জন্য। তাই ইলিশ মাছকে বলা হয় অ্যানড্রোমাস ফিশ। স্যামন
মাছও কিন্তু একই ধরনের একটি মাছ। ইলিশ মাছ তাদের জীবনের একটি বড় অংশ কাটায় সমুদ্রের লোনাপানিতে এবং যখনই তাদের ডিম পাড়ার সময় হয়, তখন তারা দল বেঁধে নদীর মোহনাগুলোতে চলে আসে। সেখানে মিঠাপানির সংস্পর্শে নিজেদের ডিম পাড়ার জন্য প্রস্তুত করে। ইলিশ মাছ বছরে দুবার ডিম পাড়ার জন্য বাংলাদেশের পদ্মা ও মেঘনা নদীর মোহনায় যেমন ভোলার চরফ্যাশন ও মনপুরা, হাতিয়ার মৌলভির চর, সন্দ্বীপের কালিরচরে আসে। একবার অক্টোবর-নভেম্বর মাসে, আরেকবার ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে। ডিম পেড়ে ইলিশ আবার ফিরে যায় সমুদ্রে। বাচ্চা ইলিশ, যাদের আমরা জাটকা নামে জানি, তারাও কিন্তু একটা নির্দিষ্ট সময় পরে খাবার এবং দৈহিক গঠন বৃদ্ধির জন্য মিঠা থেকে লোনাপানির সাগরে পাড়ি জমায়। জাটকা মাছ নদী ও নদীর মোহনায় অবস্থান করে ৪ থেকে ৫ মাস। যখন তাদের শরীর লবণাক্ত পরিবেশে খাপ খাওয়ানোর জন্য উপযুক্ত হয়, তখনই কেবল তারা পরিবেশ পরিবর্তন করে। সমুদ্রে গিয়ে পরিণত হয়ে এক থেকে দেড় বছর পর তারা আবার ডিম পাড়ার জন্য নদীতে ফিরে আসে। এভাবেই ইলিশ মাছের জীবনচক্র আবর্তিত হতে থাকে।

ইলিশের এই জীবনচক্রের অনেক ব্যাপারই বিজ্ঞানীদের কাছে অজানা। যেমন: কেন ইলিশ ডিম পাড়ার জন্য নদীতে ফিরে আসে? তার শরীরের জিনোমের কী কী পরিবর্তন তাকে ফিরে আসতে সাহায্য করে। লোনাপানিতে বসবাস করার জন্য তাকে কীভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হয়, আর কেনই–বা তাকে সমুদ্রে যেতে হয় বৃদ্ধির জন্য? এটা কি শুধু খাবারের জন্য, নাকি অন্য কোনো রহস্য আছে এর মধ্যে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যাবে যদি তার জিনোমকে আমরা সঠিকভাবে পড়তে পারি।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়া এই তিন মহাদেশের একটি সমন্বিত গবেষক দল অত্যন্ত সফলভাবে ইলিশ মাছের জীবনরহস্য উদ্‌ঘাটন করেছে। এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প যাদের হাত ধরে সফলতার মুখ দেখেছে তাঁরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জৈবপ্রযুক্তিবিদ মং সানো মারমা এবং বাংলাদেশের প্রথিতযশা বিজ্ঞানী হাসিনা খান ও তাঁর তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের মলিকুলার বায়োলজি ল্যাবের একদল তরুণ গবেষক, মোহাম্মাদ রিয়াজুল ইসলাম, ফারহানা তাসনিম চৌধুরী, জুলিয়া নাসরিন, অভিজিৎ দাস, অলি আহমেদ, তাসনিম এহসান, রিফাত নেহলীন রেজা প্রমুখ। এ ছাড়া গবেষণা দলে আরও যুক্ত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের হেরা বায়োসায়েন্সের প্রধান পিটার ইনাকিয়েভ এবং অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন ক্রস বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞ বায়োইনফরমেটিশিয়ান বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এ কে এম আবদুল বাতেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নেয়ামুল নাসের, যাঁর ইলিশ গবেষণায় ব্যাপক অভিজ্ঞতা রয়েছে, তিনিও এই প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। সর্বোত্তম প্রযুক্তির মাধ্যমে ইলিশের জীবনরহস্য উন্মোচনের কাজ অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন করে এ গবেষক দলটি। সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ও অধ্যাপক মোহাম্মাদ শামসুল আলমের নেতৃত্বে ইলিশের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের কাজ সম্পন্ন করেন।

কোনো জীবের জিনোম সিকোয়েন্সপ্রক্রিয়া নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করতে হলে কিছু বিষয়ের ওপর সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। যেমন জিনোম অ্যাসেম্বলি কতটা সঠিক, সিকোয়েন্স অ্যানোটেশন সঠিকভাবে হয়েছে কি না, যেটা পরোক্ষভাবে নির্ভর করে জিনোমের পর্যাপ্তসংখ্যক অন্তর্নিহিত সম্পদের ওপর [যেমন তার Transcriptome Data বা জিনোম থেকে কখন কী প্রোটিন তৈরি হয়, সে তথ্যের ওপর বা জিনোমের যে অংশ প্রোটিন তৈরি করে না (Non-coding) তাদের বৈশিষ্ট্যের ওপর]। ইলিশের ক্ষেত্রে জিনোম ডেটায় যেসব উপাত্ত পাওয়া গেছে, তা নিঃসন্দেহে উন্নত মানের ছিল, যা পরে বিখ্যাত জার্নালে প্রকাশিত হয়।

ইলিশের পুরো জিনোমকে ১ বিলিয়ন অক্ষরে (base pair-chemical unit) লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে এবং বিভিন্ন বায়োইনফরমেটিক টুল ব্যবহার করে ইলিশে উপস্থিত প্রায় ৩০ হাজার জিন খুঁজে পাওয়া গেছে। এই জিনোম থেকে পাওয়া তথ্য ব্যবহার করে ইলিশের গবেষণাক্ষেত্রকে আরও সম্প্রসারিত করা সম্ভব হবে। ইলিশের জিনোম সিকোয়েন্স থেকে প্রাপ্ত ফলাফল রেফারেন্স তথ্য হিসেবে ব্যবহার করা যাবে, যা দিয়ে ইলিশের কাছাকাছি অন্য প্রজাতিগুলোকে সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। জানা যাবে কেন ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের ইলিশের স্বাদে ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। সিকোয়েন্স ডেটা থেকে আরও জানা যাবে ইলিশের জিনের সংখ্যা কত, জিনগুলোর কাজ কী, পরিবেশের ভিন্নতায় জিনোমের কী পরিবর্তন (Epigenetic) ঘটে, যা ইলিশকে বিভিন্ন পরিবেশে খাপ খাওয়াতে সাহায্য করে। পদ্মা ও গভীর সমুদ্রের ইলিশের Transcriptome Data থেকে প্রাপ্ত তথ্য স্বাদু ও লোনা দুই পরিবেশেই ইলিশের বেঁচে থাকার রহস্যের সমাধান দেবে, যা দিয়ে ভবিষ্যতে স্বাদু পানিতে ইলিশের চাষ সম্ভব হতে পারে। এ ছাড়া এই গবেষণার প্রাপ্ত ফলাফল দিয়ে ইলিশের কিছু জিন আবিষ্কার করা সম্ভব হবে। সেটা হয়তো ভবিষ্যতে ইলিশের কৃত্রিম প্রজননে ব্যবহৃত হতে পারে।

লেখকদ্বয়: অধ্যাপক, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়



For More - Click Here